alo
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১২ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কম্বোডিয়ায় একতরফা নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই, ২০২৩, ১২:৫৬ পিএম

কম্বোডিয়ায় একতরফা নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে

নিউজনাউ ডেস্ক: দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় বছরের পর বছর প্রতিপক্ষ দলগুলোর ওপর নির্দয় দমনপীড়ন চালানো কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির (সিপিপি) সাথে রবিবারের ভোটে যারা অংশ নিচ্ছে, তাদের কেউই ক্ষমতাসীনদের টক্কর দেওয়ার সক্ষমতা রাখে না। 

কম্বোডিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। শক্তিশালী কোনো প্রতিপক্ষ না থাকায় এ নির্বাচন যে কয়েক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা হুন সেনের পার্টির শাসনকালই আরও লম্বা করতে যাচ্ছে, তা অনেকটাই নিশ্চিত। 

তবে এবারের নির্বাচন অন্য একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এবার হুন সেন তার বড় ছেলে হুন মানেটের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা ঘটলে ৩৮ বছর দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক এ খেমার রুজ গেরিলার শাসনের অবসান হবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, বছরের পর বছর প্রতিপক্ষ দলগুলোর ওপর নির্দয় দমনপীড়ন চালানো কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির (সিপিপি) সাথে রবিবারের ভোটে আর যারা অংশ নিচ্ছে, তাদের কেউই ক্ষমতাসীনদের টক্কর দেওয়ার সক্ষমতা রাখে না। 

ছেলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ নির্বিঘ্নে সকল বাধা অপসারণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ৭০ বছর বয়সী হুন সেন অবশ্য গত সপ্তাহ পর্যন্ত কবে নাগাদ হুন মানেট দায়িত্ব পেতে পারেন তার সময়সীমা জানাননি।

বৃহস্পতিবারই প্রথম তিনি মানেট ‘তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে’ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন- এমন ইঙ্গিত দেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য হুন সেনপুত্রকে অবশ্যই পার্লামেন্টের কোনো আসনে জয়ী হতে হবে, যা না হওয়ার কারণ নেই।

রবিবার রাজধানীর নম পেনে একটি কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর সবুজ সাফারি পরা হুন মানেট হাসিমুখে সমর্থকদের সাথে সেলফি তুলেছেন। তবে তিনি তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। 

বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, এবার ক্ষমতায় যাওয়ার পর মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে হুন সেন তার ৪৫ বছর বয়সী ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। এর মধ্যে মানেট জনসাধারণ ও রাজনীতিতে প্রভাবশালীদের কাছে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। 

হুন মানেট খুব বেশি সাক্ষাৎকার দেননি, তাই এক কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার কম্বোডিয়া নিয়ে তার চিন্তাভাবনা কী, সে বিষয়েও স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায় না।

নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর এবং ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি নেওয়া মানেট ওয়েস্ট পয়েন্ট মিলিটারি অ্যাকাডেমিতেও পড়াশোনা করেছিলেন। যা তাকে কম্বোডিয়ার সেনাপ্রধান ও সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান হওয়ার পথে সহায়তা করে।

তিনি শেষ পর্যন্ত বাবার মতো কর্তৃত্ববাদী শাসনে দেশ চালানোর পথ বেছে নেবেন, নাকি উদারনীতি ও পশ্চিমা গণতন্ত্রের পথে দেশকে এগিয়ে নেবেন, তার দিকে বিশ্বের বড় বড় পরাশক্তিগুলো তাকিয়ে থাকবে।

হুন সেনের সময়ে কম্বোডিয়া যেভাবে চীনের ছায়াতলে আছে, তার ছেলে তা থেকে বেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরতে চাইবে কিনা, তার ওপর অনেকেরই নজর থাকবে।

শুক্রবার এক সমাবেশে রকস্টারদের মতো অভ্যর্থনা পাওয়া মানেট সিপিপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ‘নির্বাচন ধ্বংসে উগ্রবাদীরা তৎপর’ বলে সতর্ক করেছিলেন।

কাগজপত্রে ত্রুটির কারণে চলতি বছরের মে মাসে কম্বোডিয়া সিপিপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যান্ডেললাইট পার্টিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছিল।

কম্বোডিয়ার জনসাধারণকে ব্যালট নষ্টের আহ্বান জানানোয় কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা বিরোধী নেতা স্যাম রেইনজি ও তার ১৬ মিত্রের ভোটদান ও নির্বাচনে অংশগ্রহণেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।   

এবারের নির্বাচনে সিপিপির সাথে বাকি যে ১৭টি দল লড়ছে, সর্বশেষ ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে এরা পার্লামেন্টে একটি আসনও জেতেনি।

নিউজনাউ/জব/২০২৩ 
 

X